আজকের পোস্টের মুল বিষয় হলো যক্ষা রোগের টিকা কে আবিস্কার করেন তা সম্পর্কে। এছাড়াও আজকের পোস্টে আমরা যক্ষা রোগের কারণ, যক্ষা রোগের লক্ষণ, যক্ষা রোগের প্রতিকার, যক্ষা রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা, যক্ষা রোগের ভাইরাসের নাম কি, যক্ষা রোগের ভাইরাসের নাম কি, যক্ষা রোগের পরীক্ষার নাম ইত্যাদি সম্পর্কেও আলোচনা করবো।
তাহলে চলুন জেনে নেই যক্ষা রোগের কারন, লক্ষন এবং প্রতিকার সম্পর্কে।
যক্ষা রোগের কারণ
যক্ষা রোগের টিকা কে আবিস্কার করেন তা সম্পর্কে আমরা পরবর্তীতে জানবো। এখন আমরা যক্ষা রোগের কারন সম্পর্কে জানবো। যক্ষা এক ধরনের ব্যাক্টেরিয়ার কারনে ছড়িয়ে থাকে। যার নাম হলো মাইকোব্যাক্টেরিয়াম টিউবারকুলোসিস।
বাতাসে এই ব্যাক্টেরিয়া ভেসে বেড়ায়। হাচি, কাশি এবং লালার মাধ্যেম এই রোগ ছড়িয়ে থাকে। এটি এক ধরনের ছোয়াচে রোগ হিসেবে ধরা হয়। যক্ষা রোগের ব্যাক্টেরিয়া আমাদের ফুসফুসের ক্ষতি করে থাকে।
যক্ষা রোগের লক্ষণ
আমরা পরবর্তীতে যক্ষা রোগের টিকা কে আবিস্কার করেন তার সম্পর্কে জানবো। এখন আমরা যক্ষা রোগের লক্ষন সম্পর্কে আলোচনা করবো। যক্ষা হলো এক ধরনের ছোয়াচে রোগ। যা আমাদের ফুসফুসের ক্ষতি করে থাকে। এখন চলুন জেনে নেই যক্ষা হলে আমাদের শরীরে কি কি লক্ষন দেখা দেয় তা সম্পর্কে। লক্ষুনগুলি নিম্নরুপঃ
- আমাদের তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কাশি থাকে।
- বুকে প্রচন্ড ব্যথার সৃষ্টি হয়।
- শরীর অনেক বেশি দুর্বল হয়ে পড়ে।
- শরীরে ক্লান্তিভাব দেখা যায়।
- আমাদের শরীরের ওজন হঠাত অনেক কমে যায়।
- আমাদের খিদে কমে যায়।
- আমাদের শরীরে সবসময় ঠান্ডা লেগে থাকে।
- রাতে ঘুমানোর সময় ঘাম হয়ে থাকে।
যক্ষা রোগের প্রতিকার
যক্ষা রোগের টিকা কে আবিস্কার করেন তা সম্পর্কে আমরা পরবর্তীতে জানবো। এখন আমরা যক্ষা রোগের প্রতিকার সম্পর্কে জানব। প্রতিকারের পদ্ধতিগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হল।
- হাচি কাশি দেয়ার সময় মুখে রুমাল দিতে হবে।
- যেখানে সেখানে কফ থুথু ফেলা যাবে না।
- আক্রান্ত ব্যাক্তি থেকে দুরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে।
- প্রতিদিনের খাবারে পুষ্টিকর ও সুষম খাবার খেতে হবে।
- সবসময় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
- যদি যক্ষা বেশি হয়ে যায় তাহলে আমাদের টিকা বা ইনজেকশন নিতে হবে।
যক্ষা রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা
যক্ষা রোগের টিকা কে আবিস্কার করেন তা সম্পর্কে আমরা পরবর্তীতে জানবো। এখন আমরা যক্ষা রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবো। যেহেতু যক্ষা রোগ আমাদের আশেপাশে ঘটিত বিভিন্ন কারনে হয়ে থাকে, সেই জন্য প্রথমে আমাদের ঘর থেকেই এর চিকিৎসা শুরু করা উচিত। যক্ষা হলে আমরা ঘরোয়া উপায়ে যেভাবে সমাধান করতে পারি তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
- প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ২-৩ কোয়া রসুন কাঁচা চিবিয়ে খেতে হবে।
- মাখন এবং মধু একসাথে মিশিয়ে খেলে আমরা যক্ষা থেকে কিছুটা রেহাই পাবো।
- আমরা প্রতিবেলার খাবারের পর মধু এবং লবঙ্গের গুড়া মিশিয়ে খেতে পারি। এতে করে আমাদের যক্ষার সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
- গরম দুধের মধ্যে অশ্বথের পাতা ডুবিয়ে দিয়ে ফুটালে পাতার রস দুধের সাথে মিশে যায়। এই দুধ খেলে আমাদের যক্ষার সমস্যা দূর হয়ে যায়।
- প্রতিদিন আদার সাথে মধু মিশিয়ে খেলে আমাদের যক্ষার সমস্যা দূর হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- যাদের যক্ষার সমস্যা রয়েছে তারা চাইলে প্রতিদিন ১০০-২০০ গ্রাম আঙ্গুর খেতে পারেন। এতে করে আমাদের যক্ষার সমস্যা দূর হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- কলা যক্ষা রোগ নিরাময়ে অনেক কার্যকরী এক ধরনের ফল।
যক্ষা রোগের প্রতিরোধ
পরবর্তীতে আমরা যক্ষা রোগের টিকা কে আবিস্কার করেন তা সম্পর্কে জানব। এখন চলুন জেনে নেই যক্ষা রোগ কিভাবে প্রতিরোধ করা যায় তা সম্পর্কে। যক্ষা প্রতিরোধের ধাপগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
- শিশুকে জন্মের পরে বিসিজির টিকা দিয়ে নেওয়া উচিত।
- যে ব্যক্তি যক্ষা আক্রান্ত হয়েছে তার থেকে দূরে থাকা উচিত।
- প্রতিবেলার খাবারে আমাদের পুষ্টিকর ও সুষম খাবার খাওয়া উচিত।
- প্রতিদিন সময় করে ব্যায়াম করা উচিত।
- আলো-বাতাসপূর্ণ স্থানে থাকা উচিত।
- ডায়াবেটিস থাকলে তার চিকিৎসা নেওয়া উচিত।
- সবসময় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকা উচিত।
- যক্ষা আক্রান্ত ব্যক্তির হাচি বা কাশির সময় মুখে রুমাল ব্যবহার করা উচিত।
- যক্ষা রোগের ক্ষেত্রে ওষুধের যে কোর্স থাকে তা সম্পন্ন করা উচিত।
যক্ষা রোগের টিকা কে আবিস্কার করেন
যক্ষা রোগ আমাদের পরিবেশে বা বাতাসে থাকা জীবানুর মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। যার কারনে কখন আমরা এই রোগে আক্রান্ত হবো তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু কখনো কোনো কারনে এই রোগ আমাদের শরীরকে আক্রান্ত করে ফেললে তা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব টিকা দেওয়ার মাধ্যমে।
যক্ষা রোগের টিকা আবিস্কার করেন ফরাসি বিজ্ঞানী আলবার্ট ক্যালমেট এবং কেমেল গুয়েরন। এই টিকা যক্ষা ভালো করার জন্য দেয়া হয়ে থাকে। এই টিকা দেয়া হয় ছোট শিশুদের।
যক্ষা রোগের ভাইরাসের নাম কি
পূর্বে আমরা যক্ষা রোগের টিকা কে আবিস্কার করেন তা সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানব যক্ষা রোগের ভাইরাসের নাম সম্পর্কে। যক্ষা রোগের ভাইরাস এর নাম হলো মাইকোব্যাক্টেরিয়াম টিউবারকলোসিস।
এই ব্যাক্টেরিয়া অক্সিজেন না থাকলে এক সেকেন্ডও বেচে থাকতে পারে না। এই ব্যাক্টেরিয়ার কারনেই আমাদের যক্ষা হয়ে থাকে। এই জীবানু প্রথম আবিস্কার করেন রবার্ট কোচ এবং তখন সময় ছিল ১৮৮২ সাল।
যক্ষা রোগের পরীক্ষার নাম
পূর্বে আমরা যক্ষা রোগের টিকা কে আবিস্কার করেন তা সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানবো যক্ষা রোগ কোন পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা যায় তা সম্পর্কে। যক্ষা রোগ দুইভাবে পরীক্ষা করা যায়। যথাঃ
- স্কিন টেস্ট এবং
- ব্লাড টেস্ট
উপরোক্ত দুই পদ্ধতিতে যক্ষা রোগ শনাক্ত করা হয়। এখন চলুন জেনে নেই যক্ষা রোগের পরীক্ষার নাম সম্পর্কে। যক্ষা রোগের পরীক্ষার নাম হলো এ এল এস টেস্ট। যা ইমিউনোলজিক্যাল টেস্ট এর মাধ্যমে করা হয়।
যক্ষা রোগের টিকার নাম কি
পূর্বে আমরা যক্ষা রোগের টিকা কে আবিস্কার করেন তা সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানবো যক্ষা রোগের টিকার নাম সম্পর্কে। যক্ষা রোগের টিকার নাম হলো ব্যাসিলাস ক্যালমেট গুয়েরিন। যাকে সংক্ষেপে বিসিজি বলা হয়ে থাকে।
পৃথিবীর যেসব দেশে অতিরিক্ত হারে যক্ষা দেখা দেয় সেই সকল স্থানে ছোট শিশুদের এই টিকা দেওয়া হয়ে থাকে। যার কারনে পরবর্তীতে বড় হয়ে সেই শিশুর যক্ষা হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
লেখকের মন্তব্য
আজকের পোস্ট এ আমরা যক্ষা রোগের টিকা কে আবিস্কার করেন, যক্ষা রোগের কারণ, যক্ষা রোগের লক্ষণ, যক্ষা রোগের প্রতিকার, যক্ষা রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা, যক্ষা রোগের ভাইরাসের নাম কি, যক্ষা রোগের ভাইরাসের নাম কি, যক্ষা রোগের পরীক্ষার নাম ইত্যাদি সম্পর্কে জেনেছি।
আশা করি আজকের পোস্ট থেকে আপনি আপনার মূল্যবান তথ্য পেয়েছেন। আমরা এই ধরনের পোস্ট প্রতিনিয়ত আপনাদের উদ্দেশ্যে শেয়ার করে থাকি। প্রতিনিয়ত পোস্ট পড়তে ওয়েবসাইট ফলোও করুন এবং নিয়মিত আপডেট থাকুন।